মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িক কারাগার হিসেবে ঘোষণা তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য বিকৃত করে অপপ্রচার শনাক্ত বাংলাফ্যাক্টের ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে সরকারের সতর্কতা পিআর ইস্যুটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে : মির্জা ফখরুল এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ১৬ অক্টোবর আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকার সফল হোক : তারেক রহমান পদার্থে নোবেল পেলেন ৩ গবেষক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অপরাধের তদন্ত শুরু হয়েছে : চিফ প্রসিকিউটর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে : জিটিওকে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ রাজনৈতিক দলগুলো চাইলেই এক মাসে ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ বাস্তবায়ন সম্ভব : মাহফুজ আলম শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে: ডিএমপি কমিশনার দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় ৭১ হাজার পুলিশ মোতায়েন ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী মার্কিন প্রেসিডেন্টের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর কন্যার যোগদান

নওগাঁয় বছরের ব্যবধানে ফের ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩, ৫:১৬ অপরাহ্ন

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাপের দংশনে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। সোমবার উপজেলার ভোরে রসুলপুর ইউনিয়নের পুস্তইল সাহাপুর রিয়াজুল জান্নাহ মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পানিহারা গ্রামের নাজিম বাবুর মেয়ে সাদিয়া খাতুন (৯) ও পার্শবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্ব ব্রাক্ষন গ্রামের আবু সায়েমের মেয়ে আসমা আক্তার সুইটি (১৩)। আহত আরেক শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুন (১১)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ জন। এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতায় মাদ্রাসা পরিচালনা করা হয়। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোন না কোন সমস্যা হতেই থাকে। তবে এলাকাবাসীরা মনে করছে মাদ্রাসায় ‘জিনের আসর’ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, রাতে বাচ্চারা ঘুমিয়ে গেলে ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার মতো ঘটনাও হয়েছে। এ কারণে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থী মোবাস্বিরা খাতুনের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় খারাপ জিনের আসর রয়েছে। বাচ্চাদের বিভিন্ন সময় স্বপ্নে দেখাতো এই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যেতে। তা না হলে বাচ্চাদের মেরে ফেলা হবে। আবার অনেক সময় রাতে মাদ্রাসার বাহির থেকে ডাকাডাকি করা হয়। কিন্তু বের হওয়ার পর আর কাউকে দেখতে পাওয়া যায় না। মেয়ে সুস্থ হলে আর ওই মাদ্রাসায় পাঠাবো না।
ওই এলাকার কবিরাজ একরামুল হক বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর কবিরাজি পেশায় আছি। মাদ্রাসার জায়গাটা অনেক দুশান্ত/খারাপ। জিনের বসবাস রয়েছে এখানে। বাচ্চাদের সবসময় ভয়ের মধ্যে রাখতো তারা।
মাদ্রাসার হুজুর জুলাইখা বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, রাতে ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করার ঘটনা ঘটে। পরে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে নেওয়া হয়েছে। তবে আমার সাথে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি । রাতে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে উঠি। এক শিক্ষার্থী সাপ কামড় দিয়েছে বলে চিৎকার করে। পরে আরও দুই শিক্ষার্থী কামড় দিয়েছে বলে চিৎকার করে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা কমিটির মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানো হয়। তবে তাদের মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না।
ওই ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার বসির আহমেদ বলেন, শুনেছি অনেক আগে মাদ্রাসার ওই জায়গায় মন্দির ছিল। এরপর দীর্ঘদিন সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফাঁকা পড়েছিল। পরে গ্রামবাসী সেখানে মাদ্রাসা তৈরি করে নিজেদের সহোযোগিতায় পরিচালনা করে আসছিল। গতবছর দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর মাদ্রাসায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছিল। দিনে মাদ্রাসায় পাঠদান করা হলেও অন্য জায়গায় বাচ্চারা রাতযাপন করতো। এভাবে ৪-৫ মাস কোন সমস্যা না হওয়ায় আবারও বাচ্চাদের মাদ্রাসায় পাঠদান ও রাতযাপন শুরু করে। যেখানে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে সেখানে প্রতিষ্ঠান না থাকাই ভাল।
স্থানীয় রসুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বাবু বলেন, গত বছরও দুই শিশু শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এ বছর  আবারও দুইজন মারা যায়। শোনা যাচ্ছে সাপে দংশন করছে কিন্তু চোখে দেখা যাচ্ছে না। বিষাক্ত কিছু কামড় মনে হচ্ছে। আমার কাছে দুংখজনক মনে হচ্ছে।
নিয়ামতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার রাত ১০ টায় শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে যায়। রাত ২টার দিকে সাপে দংশন করলে শরীর জ্বালা করায় কান্না শুরু করে। ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে একজন মারা যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যায়। গুরুত্বর অবস্থায় অপর জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
বিষয়টি জানতে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ থাকায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা: অনুপ কুমার বলেন, হাসপাতালে এ ধরনের কোন রোগী আসেনি। তবে এমন একটি ঘটনা শুনেছি তারা রোগীদের রাজশাহী নিয়ে গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর