জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে মামলা করা ১৫০ জন গ্রাহকের ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। রোববার (৪ ফ্রেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সভাকক্ষে মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের উপস্থিততে ১৫০ জন গ্রাহকের হাতে ১৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
টাকা ফেরত পাওয়ার পর ইভ্যালির গ্রাহকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। টাকা হাতে পেয়ে সাজ্জাদ হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, আমি আশায় ছেড়ে দিয়েছিলাম, কখনো ভাবিনি ইভ্যালি টাকা ফেরত দিবে। আজ টাকা হাতে পেয়ে ইভ্যালীর প্রতি আমার আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গেল।
আবু সালেহ বলেন, ২০২১ সালে পণ্য অর্ডার করেছিলাম, আজ টাকা ফেরত পেয়েছি। ইভ্যালিকে ব্যবসা করতে দিলে সব গ্রাহক ফেরত পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গ্রাহহকের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মাদ রাসেল বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভোক্তা-অধিকারে থাকা অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি শুরু করলাম। মাত্র একমাস ব্যবসা করার সুযোগ পেয়েছি, এসময়ের মধ্যে ১৫০ গ্রাহককে ১৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে পেরেছি। যদি ইভ্যালিকে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে প্রতি মাসে ব্যবসায়িক মুনাফার অংশ থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক অভিযোগ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবো। ব্যবসা করতে পারলে ৬ মাসের মধ্যে সকল গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরোবলেন, আমরা এখন যে পদ্ধতিতে ব্যবসা করছি এতে করে খুব দ্রুতই সকলের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হবে। যারা অভিযোগ করেছে শুধু তাদের নয়, যারা টাকা পাবেন এমন সবার টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে। এজন্য আমরা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলাপ করে শিগগির ঘোষণা দেব।
ভোক্তা-অধিকারে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ নিষ্পত্তি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ইভ্যালি ব্যবসা করতে পারলে টাকা ফেরত দিতে পারবে। জেলে আটকে রাখলে টাকা পাওয়া সম্ভব না। ইভ্যালিকে ব্যবসা চালাতে হলে আমাদের অভিযোগ নিষ্পত্তি চলমান প্রক্রিয়াতে শেষ করতে হবে। এটা না করলে আমরা ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
ভোক্তার মহাপরিচালক আরো বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে ই-কমার্সের ব্যবসার অগ্রগতি বাড়াতে হবে। তবে তা হতে হবে সঠিক পন্থায়। অনেক ব্যবসায়ী অর্থ পাচার করেছেন এবং দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন। বর্তমানে ভোক্তা অধিদপ্তরে ১১ হাজার মামলা পেন্ডিং রয়েছে। যেসব ই-কমার্স ব্যবসায়ী গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যেমে তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, উপপরিচালক (অভিযোগ) মাসুম আরেফিন, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।