শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
শাহবাগে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ মাগুরায় নির্যাতিত শিশুর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শোক ‘দৈনিক যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : প্রধান উপদেষ্টা নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হলে কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না: শিক্ষা উপদেষ্টা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে কঠোর অবস্থানে সরকার পরিবারসহ শামীম ওসমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে : তারেক রহমান আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক ইউক্রেনে শান্তি আলোচনায় প্রয়োজন হবে ইউরোপকে: পুতিন নতুন দলের নেতৃত্বে নাহিদ ইসলাম, আরও থাকছেন যারা আসিফ-মাহফুজের পদত্যাগের প্রশ্নে যা বললেন নাহিদ নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন নিজেরা ভেদাভেদ সৃষ্টি না করি, ঐক্যবদ্ধ থাকি : সেনাপ্রধান

দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ ও ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠনের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৭:৪৭ অপরাহ্ন

দেশকে ৪টি প্রদেশে ভাগ করার পাশাপাশি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ নিয়ে গ্রেটার ঢাকা ক্যাপিটাল সিটি বা রাজধানী মহানগর সরকার গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৪০ থেকে কমিয়ে ২৫টি করা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বিদ্যমান পদবি পরিবর্তন করে ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা কমিশনার’ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পদবি পরিবর্তন করে ‘উপজেলা কমিশনার’ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানানো হয়।
বর্তমানে মোট ৪৩টি মন্ত্রণালয় এবং ৬১টি বিভাগ রয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোকে যুক্তিসংগতভাবে কমিয়ে কমিশন সরকারের সব মন্ত্রণালয়গুলোকে মোট ২৫টি মন্ত্রণালয় ও ৪০টি বিভাগে পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ করছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এজন্য মন্ত্রণালয়গুলোকে সমপ্রকৃতির পাঁচটি গুচ্ছে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিধিবদ্ধ প্রশাসন; অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য, ভৌত অবকাঠামো ও যোগাযোগ; কৃষি ও পরিবেশ; মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন-মন্ত্রণালয়গুলোকে এ পাঁচটি গুচ্ছে বিভক্ত করার প্রস্তাব করেছে কমিশন। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলো কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের জনবল কাঠামো পুনর্বিন্যাস, বিভিন্ন সেক্টর করপোরেশনের পুনর্বিন্যাস, মন্ত্রণালয়ের নীতি ও পরিকল্পনা কোষ শক্তিশালীকরণ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ, নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগ পৃথকীকরণ, রাজস্ব বোর্ডের নীতি ও বাস্তবায়ন পৃথকীকরণ, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, নতুন প্রশাসনিক বিভাগ গঠন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস একই কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আনা, বিবাহ রেজিস্ট্রিকরণ কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়গুলো আলোচনা করে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি সুপারিশমালা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) আওতায় বিদ্যমান একীভূত ‘ক্যাডার সার্ভিস’ বাতিল করে সার্ভিসের ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা নামকরণের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২৬টি ক্যাডারকে কমিয়ে ১৩টি প্রধান সার্ভিসে বিভক্ত করে এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের এসব সার্ভিসে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিস ছাড়া বাকি সার্ভিসের নিয়োগ ও পদোন্নতির পরীক্ষার জন্য একটি পিএসসি থাকবে। এর নাম হবে পিএসসি (সাধারণ)। আর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সার্ভিসের নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য পৃথক দুটি পিএসসি করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমান বিসিএস ক্যাডার ও নন ক্যাডার নিয়োগে একটি পিএসসি কাজ করছে।
বর্তমানে পিএসসির অধীন তিন ধাপের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দক্রম ও পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ক্যাডার নির্ধারণ করা হয়। ক্যাডারগুলো হলো প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্র, কর, কৃষি, আনসার, নিরীক্ষা ও হিসাব, সমবায়, শুল্ক ও আবগারি, পরিবার পরিকল্পনা, মৎস্য, খাদ্য, বন, সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য, পশুসম্পদ, ডাক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, গণপূর্ত, রেলওয়ে প্রকৌশল, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক, সড়ক ও জনপথ, পরিসংখ্যান ও বাণিজ্য ক্যাডার। একেকটি চাকরির কাজের ধরন একেক রকম। পদ-পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধায় ভিন্নতা আছে। এসব নিয়ে ক্যাডারগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্বও আছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এসব ক্যাডারকে ১৩টি সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো; প্রশাসনিক সার্ভিস, বিচারিক সার্ভিস, জননিরাপত্তা সার্ভিস, পররাষ্ট্র সার্ভিস, হিসাব সার্ভিস, নিরীক্ষা সার্ভিস, রাজস্ব সার্ভিস, প্রকৌশল সার্ভিস, শিক্ষা সার্ভিস, স্বাস্থ্য সার্ভিস, কৃষি সার্ভিস, তথ্য সার্ভিস এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিস। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু ক্যাডার এসব কিছু কিছু সার্ভিসে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন বিসিএস খাদ্য ও সমবায়কে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিসের (বর্তমানের প্রশাসন ক্যাডার) সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই দুটি সার্ভিসে নতুন নিয়োগ করা যাবে না। বিসিএস (হিসাব ও নিরীক্ষা) সার্ভিসকে দুটো সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একটি হবে ‘বাংলাদেশ হিসাব সার্ভিস’ এবং আরেকটি হবে ‘বাংলাদেশ নিরীক্ষা সার্ভিস’। এলজিইডি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে কর্মরত প্রকৌশলীদের ‘প্রকৌশল সার্ভিস’ হিসেবে একীভূত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগদানের তারিখ থেকে পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।
বর্তমানে বিসিএস (সাধারণ তথ্য) ক্যাডারের অধীনে তিনটি সাব ক্যাডার আছে। যাদের মধ্যে পদোন্নতির সুযোগ-সুবিধার বৈষম্য রয়েছে। এসব বৈষম্য দূর করার জন্য তিনটি সাব ক্যাডারকে বিলুপ্ত করে সহকারী পরিচালক, তথ্য কর্মকর্তা, গবেষণা কর্মকর্তা ও সহকারী অনুষ্ঠান পরিচালক এবং সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক পদগুলো নিয়ে একটি একীভূত সার্ভিস গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে। সম্মিলিত মেধা তালিকার ভিত্তিতে তাদের জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি ও পদায়নের সুপারিশ করেছে কমিশন। সরকারি দপ্তরের আইসিটি কর্মকর্তাদের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিসে’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিসিএসকে (তথ্য প্রকৌশল) এই সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিসিএস (বন) এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশ সার্ভিসের কর্মকর্তাদের একীভূত করে বাংলাদেশ কৃষি সার্ভিসের উপসার্ভিস হিসেবে ‘বন ও পরিবেশ সার্ভিস’ করারও সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
এছাড়া কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে আলাদা বিভাগ করা, ইমিগ্রেশনের জন্য পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠন, পাবলিক সার্ভিস পৃথক করে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠনের সুপারিশও করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) পদবি পরিবর্তন করে ‘অতিরিক্ত জেলা কমিশনার (ভূমি ব্যবস্থাপনা) করা এবং জেলা কমিশনারকে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়, জেলা কমিশনারকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সিআর (কোর্ট রেজিস্ট্রার) মামলা প্রকৃতির অভিযোগগুলো গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হলো। তিনি অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য উপজেলার কোনো কর্মকর্তাকে বা সমাজের স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মাধ্যমে সালিশি বা তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারবেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হলে থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবেন। পরে মামলাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতে চলে যাবে। কমিশন বলছে, এর ফলে সাধারণ নাগরিকেরা সহজে মামলা করার সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে সমাজের ছোটখাটো বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হয়ে গেলে আদালতের ওপর অযৌক্তিক মামলার চাপ কমবে। তবে এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারী একই বিষয়ে পুনরায় আদালতে যেতে পারবেন না। এ সুপারিশের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
কমিশন উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পুনঃস্থাপনের সুপারিশ করে বলেছে এটি করা হলে সাধারণ নাগরিকেরা অনেক বেশি উপকৃত হবে। এ বিষয়েও সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছে কমিশন। ‘উপজেলা জননিরাপত্তা কর্মকর্তা’ পদের সুপারিশ করে কমিশন বলেছে থানার ‘অফিসার ইনচার্জ’ এর কাজ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার তদারকির জন্য উপজেলা পর্যায়ে একজন সহকারী পুলিশ সুপারকে ‘উপজেলা জননিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে পদায়ন করা যেতে পারে।
‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠন: ভারতের নয়াদিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ (ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট) গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। কমিশন পুরাতন চারটি বিভাগকে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ করেছে। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ও পরিষেবার ব্যাপ্তির কথা বিবেচনায় রেখে ভারতের নয়াদিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট বা রাজধানী মহানগর সরকার গঠনের সুপারিশ করা হলো। অন্যান্য প্রদেশের মতোই এখানে নির্বাচিত আইনসভা ও স্থানীয় সরকার থাকবে। ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জ নিয়ে ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্টের আয়তন নির্ধারণ করা যেতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণের প্রথা বাতিল এবং অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) না করার সুপারিশ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮ এর ধারা ৪৫ বিধান অনুসারে ২৫ বছর চাকরির পরে সরকার ইচ্ছে করলে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারে বলে যে বিধান রয়েছে তা বাতিলের সুপারিশ করা হলো। নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন নিশ্চিত করার জন্য এই সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে আরও বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কোনো অফিসার, কর্মচারীকে ওএসডি না করার জন্য সুপারিশ করা হলো। কোনো ওএসডি কর্মকর্তাকে কাজ না দিয়ে বেতন-ভাতা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে শিক্ষকতা বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাময়িকভাবে পদায়ন করা যেতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তাদের শূন্য পদের বাইরে কাউকে পদোন্নতি না দেওয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্য করা গেছে, শূন্য পদের চেয়ে অধিক সংখ্যক পদে পদোন্নতি দিয়ে জটিলতার সৃষ্টি করা হয়। এরূপ প্রবণতা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। কেবলমাত্র শূন্য পদের বিপরীতে সমসংখ্যক পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিধান করার জন্য সুপারিশ করা হলো। কমিশন বলেছে, সব ক্যাডারের লাইন প্রমোশন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সার্ভিসের মধ্যে যে বৈষম্যের অভিযোগ রয়েছে বিশেষ করে যেসব সার্ভিসে ১ থেকে ৪ গ্রেড পর্যন্ত পদ নেই তা সমাধানের জন্য প্রত্যেক সার্ভিসে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৪ এর প্রয়োজনীয় সংখ্যক পদ সৃষ্টি করা যেতে পারে। একইভাবে নির্দিষ্ট সার্ভিসের কর্মপরিধির চাহিদার সমানুপাতিক হারে পদোন্নতির জন্য বিভিন্ন গ্রেডের পদ সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সার্ভিসের ৫ম ও ৩য় গ্রেডের সমমানের পদে পদোন্নতির জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মাঠ প্রশাসন ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলের বিভিন্ন ঐতিহ্য ও বিধিবিধান অনুসরণ করে পরিচালিত হয়। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানে মাঠ প্রশাসনের জন্য আলাদা আইন থাকলেও বাংলাদেশে তা না থাকায় মাঠ প্রশাসনে অনেক সময় বিভিন্ন সরকারি বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয়। এ সমস্যা দূরীকরণের জন্য মাঠ প্রশাসনের জন্য আলাদা আইন প্রণয়ন করার জন্য সুপারিশ করা হলো।
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে আলাদা বিভাগ করার সুপারিশ করে কমিশন তাদের প্রস্তাবে বলেছে, বর্তমানে দেশে মোট ৮টি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে। ভৌগোলিক ও যাতায়াতের সুবিধা বিবেচনায় কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগ গঠনের দাবি অনেক দিনের। সুতরাং কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করার সুপারিশ করা হলো। জনসংখ্যা ও যোগাযোগের বিবেচনায় দশটি বিভাগকে পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাবের বিস্তারিত বিবরণ পেশ করেছে কমিশন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর