শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নিজ ঘরে মিলল ২ সন্তানসহ মায়ের গলাকাটা মরদেহ ‘দেশের শীর্ষ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে’ গোপনে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় যেসব খাবার পল্লবীতে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেফতার ৩ নৌকা প্রতীক থাকবে কিনা, জানালেন নির্বাচন কমিশনার নতুন প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কমিটির কাজ শুরু হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরও ২ মাস বাড়লো ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকে সারা দেশে চিরুনি অভিযান শুরু’ স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যেন ফিরে না আসে সে জন্য ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে : বদিউল আলম চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান : ছাত্রশিবির মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা, যুবদলের ২ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ নিখোঁজের একদিন পর মসজিদের দোতলায় পড়ে ছিল শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ

প্রতিরোধের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিন নীতি

ডেস্ক রিপোর্ট
আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩, ১:৫৩ অপরাহ্ন

ঘরে-বাইরে প্রতিরোধের মুখে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিন নীতি। ইসরাইলের প্রতি তাদের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন ও যুদ্ধবিরতিতে তাদের অনীহার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে মানুষ। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার জেরে এক সপ্তাহজুড়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা বেড়েছে।
মঙ্গলবার ইরাকের উত্তরাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে সশস্ত্র ড্রোন হামলা হয়েছে। কেবল দেশের বাইরে নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বাইডেনের ফিলিস্তিন নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মানুষ। মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা ও নীতির সমালোচনা করে নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একাংশ। গাজায় যুদ্ধ বিরতির দাবিতে সোমবার আবারও নিউইয়র্কে বিক্ষোভ হয়েছে। ওয়াশিংটনে ইসরাইলমুখী অস্ত্রবাহী জাহাজ আটকে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সম্ভাব্য গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে। যুদ্ধবিরতির পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো অবস্থানের বিপরীতে তারা ইসরাইলি সুরের প্রতিধ্বনি করে যুদ্ধবিরতি নাকচ করে যাচ্ছে। ইসরাইল তাদের দেওয়া অস্ত্রে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা বেড়েছে : মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদফতর পেন্টাগনের দেওয়া তথ্য মতে, মধ্যপ্রাচ্যে হামলায় মার্কিন সেনা হতাহতের সংখ্যা গত এক সপ্তাহে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮, যার মধ্যে ইরাকে ২০ জন এবং সিরিয়ায় ১৮ জন। পেন্টাগনের প্রেস সচিবের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য হিল এ খবর জানিয়েছে।
সহিংসতা শুরুর পর ইরাকে অন্তত ১২ বার আর সিরিয়ায় চারবার হামলার শিকার হয়েছে মার্কিন সেনারা। পেন্টাগনের প্রেস সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, সেনাদের কাজে বাধা দিতে ও হয়রানি সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় ৪৫ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২৪ জন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। গত এক সপ্তাহের হিসাব করলে দেখা যায়, এক সপ্তাহে সেনাদের ওপর ছয় দফা হামলা চালানো হয়েছে।
গাজা-ইসরাইল সহিংসতা চলাকালে এরই মধ্যে ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে শত শত সেনা, দুটি রণতরি এবং একটি পারমাণবিক  সাবমেরিন মোতায়েন করেছে। সোমবার রাইডার বলেন,  যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে যে সেনা হতাহতের সংখ্যা যেন বৃদ্ধি না পায়। মার্কিন সেনাদের সুরক্ষার জন্য তারা কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, আমরা নিশ্চিত করব যে আমাদের সেনাদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে এর প্রতিশোধ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি সপ্তাহের আগের সপ্তাহের হিসাবে মার্কিন সেনা নিহতের সংখ্যা ছিল ৩২।
মঙ্গলবার ইরাকের উত্তরাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে সশস্ত্র ড্রোন হামলা হয়েছে। দেশটির ইরবিলে মার্কিন ঘাঁটির দিকে ছুটে আসা অন্তত তিনটি ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে সৈন্যরা। এতে কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
খোদ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিরোধিতার সুর : মার্কিন রাজনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো ফাঁস হওয়া এক নথির (ডিসেন্ট মেমো) বরাতে জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা ও নীতির সমালোচনা করে এর নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একাংশ। কথিত ফাঁস হওয়া নথিতে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যনীতির প্রতি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ মতভিন্নতার কথা উঠে এসেছে। ফাঁস হওয়া এই নথিতে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে ইসরাইলের সমালোচনা করার সদিচ্ছা থাকা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। পলিটিকো বলছে, এতে ইঙ্গিত রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য সংকটে বাইডেনের নীতির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন দেশটির কূটনীতিকরা।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথোপকথন ও প্রতিবেদন অনুসারে, এই নথিতে মন্ত্রণালয়টির মাঝারি ও নিচের সারির কূটনীতিকদের মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই ধরনের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ যদি তীব্র আকার ধারণ করে, তবে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নীতি নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

নথিতে দুটো অনুরোধের বিষয় উঠে এসেছে। প্রথমত, গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন জানানো। দ্বিতীয়ত, ইসরাইলের সঙ্গে একান্ত আলোচনা ও প্রকাশ্যে দেওয়া বক্তব্যের মধ্যে ভারসাম্য আনা। এর মধ্যে রয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কৌশল ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের আচরণের প্রকাশ্য সমালোচনা, যা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র গোপন রাখতে চায়।
নথিটিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের অবশ্যই ইসরাইলের আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘনের প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে হবে। যখন ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা সহিংসতা ঘটায় এবং অবৈধ জমি দখল করে বা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে, তখন আমাদের অবশ্যই প্রকাশ্যে বলতে হবে; এসব সমর্থন করা আমেরিকার মূল্যবোধবিরোধী।’
এই নথিটিকে ‘স্পর্শকাতর কিন্তু আনক্লাসিফাইড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এতে ঠিক কতজন ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন বা এটি কখন এবং কোন বিভাগের ডিসেন্ট চ্যানেলে জমা দেওয়া হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়।
নিউইয়র্কে বিক্ষোভ, ওয়াশিংটনে প্রবল প্রতিরোধ : গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফের যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন নিউইয়র্কের বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় সময় সোমবার (৬ নভেম্বর) স্ট্যাচু অব লিবার্টির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে কয়েকশ বিক্ষোভকারী। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের টাকোমা বন্দরে বিক্ষোভ হয়েছে। একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ আটকে দিতে তাদের এই বিক্ষোভ। তাদের ধারণা, যুদ্ধাস্ত্র বোঝাই করে এই যুদ্ধজাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরাইল যাচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, এই যুদ্ধজাহাজে বোঝাই করে নেওয়া অস্ত্র ইসরাইল চলমান সংঘাতে গাজার নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে। ৩১ দিন ধরে ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় প্রায় ৬ হাজার নারী-শিশুসহ ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
টাকোমায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওয়াসিম হেজ বলেন, ‘আমরা এখন যুদ্ধবিরতি চাই। আমরা এখন মানুষ হত্যা বন্ধ করাতে চাই। আমরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির আসল পরীক্ষা দেখতে চাই। আমরা দেখতে চাই, ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল দেওয়া বন্ধ হয়েছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর