নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন।
বুধবার ঢাকায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি। সেই লিখিত অভিযোগের কপি আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের কাছেও পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে আরিফুর রহমান বলেন, ফরিদপুর-১ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম, নন-ভোটার দিয়ে ভোট প্রদান, অনেক কেন্দ্র থেকে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়া, নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনসহ ব্যাপক জাল ভোট দিতে দেখা গেছে। একজন বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীদেরও ভোট নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের বিষয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের অবগত করা হলেও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশনের সচিবকে সরাসরি মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েও কোনো ফল হয়নি। জাল ভোট পড়ার বিষয়ে একাধিক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের জানালে তাঁরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে রহস্যজনক আচরণ করেন।
অভিযোগে আরিফুর রহমান উল্লেখ করেন, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের দিন সকাল থেকে ভোট কারচুপির উদ্দেশে একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর সমর্থকেরা অবস্থান নেন। কেন্দ্র এলাকায় তাঁরা ঈগল প্রতীকের কর্মীদের মারধর করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলের ওই প্রার্থীর লোকজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনেক কেন্দ্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ব্যালট পেপারে সিল মারেন।
ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টা পর কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে আরিফুর রহমান বলেন, ‘আবার বিকেল চারটায় ভোট শেষ হলে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের ভোট গণনার কক্ষে রেখে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। এর আগেই ভোটের মনগড়া ফলাফল লেখা কাগজে জোর করে আমার এজেন্টদের স্বাক্ষর রাখা হয়। সেখান থেকে ওই বিশেষ প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।’
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আবদুর রহমান ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরিফুর রহমান পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৯৮৯ ভোট।
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যে অভিযোগ এনেছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। ওই আসনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। যেহেতু তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, এ অভিযোগ সিইসি অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন।