বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত সোমবার ৩ শতাংশের বেশি কমেছে। মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে তেলের সরবরাহে সংকটের আশঙ্কা করা হলেও বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব তেলের দাম কমিয়েছে এবং ওপেকের তেল উৎপাদন বেড়েছে। এর ফলে সরবরাহের সংকট নিয়ে শঙ্কা কমেছে। খবর রয়টার্সের।
গত সোমবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বা ২ দশমিক ৬৪ ডলার কমে ৭৬ দশমিক ১২ ডলারে নেমে আসে। অন্যদিকে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৩ দশমিক শূন্য ৪ ডলার বা ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমে ৭০ দশমিক ৭৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এই দুই ধরনের তেলের দাম ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে ২ শতাংশের বেশি বেড়েছিল। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তখন তেলের দাম বেড়েছিল।
রোববার সৌদি আরবের আরব লাইটের দাম এশিয়ার বাজারের জন্য কমানো হলে এই তেলের দাম গত ২৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে; সেই সঙ্গে চলতি বছরের শুরুতে বৈশ্বিক স্টক মার্কেটের সূচনা ভালো হয়নি এবং এখন সৌদি আরবের তেলের দাম কমার খবরে তা আরও নিম্নমুখী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রয়টার্সের জরিপে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে ওপেকের তেল উৎপাদন বেড়েছে। সৌদি আরবসহ কয়েকটি সদস্য দেশ তেল উৎপাদন কমালেও অ্যাঙ্গোলা, ইরাক ও নাইজেরিয়ার মতো দেশের উৎপাদন বাড়ায় সামগ্রিকভাবে ওপেকের তেল উৎপাদন বেড়েছে।
২০২৪ সালে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেল উৎপাদন কমাবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বছরের শুরুতে অ্যাঙ্গোলা ওপেক থেকে বেরিয়ে যায়। অ্যাঙ্গোলাসহ কয়েকটি দেশের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাজারে তেলের সরবরাহ কমছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারের মৌলভিত্তির সাপেক্ষে বলা যায়, অপরিশোধিত তেলের জোগান কমবে না। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আবারও বেড়ে যাওয়ায় বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার ঝুঁকি আছে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরব নেতাদের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসেছেন। লক্ষ্য হচ্ছে, গাজার যুদ্ধ যেন ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, তেলের দাম আরও কমতে পারত, যদি লিবিয়ার ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন সাহারা তেল ক্ষেত্রের উৎপাদন অনিবার্য কারণে কমাতে বাধ্য না হতো।