বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেফতার ১,৭৫৪ জন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন ইফার গর্ভনরেরা এনসিপির একটা এজেন্ডা বিএনপির নামে বদনাম করা: ইশরাক পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে : প্রধান উপদেষ্টা যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: তারেক রহমানের ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক পদক্ষেপ শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি হবে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শিক্ষার্থীর আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের ফোন নাম্বার উল্লেখের নির্দেশ হাইকোর্টের সচিবালয়ের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত বাবা-মায়ের পাশে শায়িত শিক্ষিকা মাহরিন ‘বিমান বিধ্বস্তের সময় আর্তচিৎকারে পুরো ক্যাম্পাস ভারি হয়ে ওঠে’ প্রয়োজনে আবার ইরানে হামলা করবে যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প বিমান দুর্ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও বার্তা

প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ন

রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সমাজসেবার হটকারী সিদ্ধান্তে মামলার ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেই মামলা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে সাংবাদিকদের মাঝে। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে নাগরিক সমাজসহ সচেতন মহল। উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, তিনি বলেন সাংবাদিকের নামে মামলা এটা ঠিক হয়নি, সংবাদ পত্রের কন্ঠ রোধ করার শামিল উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, রংপুর মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিমুল বারি রাজ মিথ্যা মামলা করে নিরপেক্ষ হারিয়েছে, তদন্তপূর্বক এই মামলা প্রত্যাহার এর দাবি করেন, রাজনীতিবীদ আজাদুল ইসলাম আজাদ, আবুল কালাম মুকুল, সাবেক ছাত্রদল নেতা আবিদ হাসান গুড্ডুসহ সাংবাদিকরা।
জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে রংপুরের পায়রা চত্ত্বরে একটি ভবনে প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর শহর উন্নয়নের জন্য সরকার প্রেসক্লাবের সেই জায়গাটি অধিগ্রহণ করে তার বদলে জাহাজ কোম্পানীর সামনে স্টেশন রোডস্থ ছোট একটি ড্যামেজ ভবন তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দেয়। এরপর প্রেসক্লাবের তৎকালীন কমিটি ১৯৯১ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেয় যা ১৯৯৩ সালে কমিটি পরিবর্তন হলে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ বা প্রেসক্লাবের তৎকালীন কমিটির কেউ আর খোঁজ রাখে না।
সূত্র মতে, পরবর্তীতে রংপুরের সিনিয়র সাংবাদিকরা ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতীকি মূল্যে স্টেশন রোডস্থ বাহারবন কাচারীরস্থ বর্তমান জায়গাটি খরীদি দলিলে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এরপর ১৯৯৬ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোয়াজ্জেম হোসেনকে নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান করে নিজস্ব অর্থায়নে পর্যায়ক্রমে বর্তমান প্রেসক্লাব ভবন গড়ে তোলা হয়।
প্রেসক্লাব সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে সাবেক সভাপতি অনিয়ম ও দুর্নীতি করে একক সিদ্ধান্তে সদস্যদের নির্মাণ কাজে দেয়া ২৪ লাখ টাকা ১২টি চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মাসাত করেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে ক্লাবের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং আত্মসাতকৃত টাকা আদায়ের জন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হয় যা এখনও চলমান।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সে সময়কারী সুবিধাবাদী কতিপয় নামধারী সাংবাদিকদের নিয়ে ক্লাব বহিস্কৃত সদস্য বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলনের নামে প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে সমাজসেবার কাছে অভিযোগ করে এবং ভুয়া একটি কমিটি করে সমাজসেবায় দাখিল করে। সেই সাথে সমাজসেবাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে অবৈধ হস্তক্ষেপের জন্য চাপ দেয়। সমাজসেবা এ বিষয়ে প্রেসক্লাবের কাছে প্রায় ৩২ বছর ধরে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন না করার অভিযোগ তুলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে সমাজসেবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ। সেই মামলা থাকাকালীন হঠাৎ করে ১৫ জানুয়ারি সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত এক আদেশে প্রেসক্লাব পরিচালনার জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক মন্ডলী নিয়োগ করে। এ আদেশের বিপক্ষে ন্যায় বিচার চেয়ে প্রেসক্লাব পুনরায় সমাজসেবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক সমাজসেবা কর্মকর্তাদের কাছে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগে কেন চিঠি দেওয়া হলো এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে স্বশরীরে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এরপর অন্যান্য দিনের মত ২২ জানুয়ারি ক্লাব খুলে সকল সাংবাদিক ক্লাবে প্রবেশ করে। এ ঘটনায় ওই রাতে ক্লাবের বহিস্কৃত সদস্য ও কুচক্রী মহলের ইন্ধনে শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বাদী হয়ে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলীসহ ১৯ সাংবাদিক এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে একটি ভুয়া মামলা দায়ের করে।
সাংবাদিক রেদোয়ান হিমেল বলেন, সদস্যরা নিয়মিত প্রেসক্লাবে বসে তাদের নিজস্ব গতিতে  পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে কোন সমস্যা নেই। সাংবাদিকতাকে কলুষিত করতে একটি মহল ইন্ধন দিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে নানান ঘটনা রটে বেরাচ্ছেন।
রংপুর প্রেসক্লাবের প্রবীন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, সমাজসেবার নিবন্ধন নেওয়ার পর তারা আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি এবং আমরাও সমাজসেবা থেকে কোন সুযোগ-সুবিধা বা সহযোগিতা পাইনি। হঠাৎ করে একটি পক্ষের কাছে ম্যানেজ হয়ে সমাজসেবা হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতাকে বিতর্কিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
তিনি বলেন, সমাজসেবা দীর্ঘদিনের নিবন্ধন নবায়ন না করায় তা জরিমানাসহ নিবন্ধন ফি নিতে পারেন। অন্যত্থায় নিবন্ধন বাতিল করতে পারেন। এর বেশি কিছু না। কিন্তু তারা যা করেছে, তা কোন ক্রমেই সচেতন মহলে গ্রহণযোগ্য নয়।
রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএনপি নেতা মোনাব্বর হোসেন বলেন, গত ২০২৩ সালে প্রেসক্লাবের নির্বাচনে আমাকে বিএনপি আখ্যা দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা পারেনি। দল, মত, নির্বিশেষে প্রেসক্লাব নিজস্ব গতিতে চলছে। মামলা চলমান থাকার পর বিতর্কিত সাংবাদিকদের পক্ষ নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর অবৈধ হস্তক্ষেপ করে রংপুরের পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। যেহেতু সমাজসেবা, সেহেতু আমরা পর্যবেক্ষন করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর