সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আর্থিক লেনদেন বর্জন, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি না করা এবং তাদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণসহ ১২ দফা নির্দেশনা প্রতিপালনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ৫৭টি শাখার কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রে এর ব্যতয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের সহকারি রেজিস্ট্রার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বিচারপতি এই নির্দেশনা দেন। সভাটি সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে আইনজীবী, তাদের সহকারি ও বিচারপ্রার্থী জনগণ সার্বক্ষনিক সেবা নিতে আসেন। এসকল সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে আপনাদের ভালো আচরণ করতে হবে। দিতে হবে উন্নতমানের সেবা। সুপ্রিম কোর্টের এই সেবা প্রদান সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরনীয় আদর্শ তৈরি করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
এ সময় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আজিজ আহমেদ ভুঞা, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি ১২ দফা নির্দেশনা
দায়িত্ব পালনে কোড অব কনডাক্ট (আচিরণবিধিমালা) যথাযথভাবে পালন করতে হবে। কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করা যাবে না। এটা সম্পূর্নভাবে বর্জন করতে হবে। সেবা গ্রহীতাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রদানের সময় কোন প্রকার বিলম্ব সম্পূর্ন পরিত্যাজ্য করতে হবে। সেবা গ্রহীতাদের কোনো প্রকার হয়রানি করা যাবে না। সেবা গ্রহীতাদের সাথে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। প্রতিটি শাখায় প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন সম্পন্ন করতে হবে এবং কোনো কাজ ফেলে রাখা যাবে না।
প্রত্যেক শাখার সহকারি রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারগণকে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখাসমূহে প্রতিদিন সরেজমিনে মনিটর করতে হবে। প্রত্যেক শাখার সহকারি রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারগণ তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখার কার্যক্রম সম্পর্কে স্ব স্ব অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারগণকে নিয়মিত অবহিত করতে হবে। প্রতি চার সপ্তাহ পর পর অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারগণ মনিটরিং কার্যক্রমের প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল আপিল এবং হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের নিকট রিপোর্ট আকারে দাখিল করতে হবে।
যদি কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী আচরণবিধি এবং এসব নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো সেবা গ্রহীতাকে হয়রানি করেন বা আর্থিক লেনদেন করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কোন ধরনের কার্পণ্য করা হবে না।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১৯ টি এবং হাইকোর্ট বিভাগে ৩৮ টি শাখা রয়েছে। রেজিস্ট্রার জেনারেল, রেজিস্ট্রার, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, স্পেশাল অফিসার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, সহকারি রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন কোর্ট ও শাখায় মোট আড়াই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত রয়েছেন।