পোলিং এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ ভোটে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ঢাকা-৪ আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানমের রিটে মঙ্গলবার প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু, আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু নয়াকণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী সানজিদা খানমের পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে।
মারধরের ভিডিওচিত্র আজ আদালতকে দেখানো হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, লোকজন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন নিজে মারপিট করছেন। তা ছাড়া কেন্দ্রভিত্তিক যে ফলাফল দেওয়া হয়েছে, সেই ফলাফলের কাগজে (রেজাল্টশিট) সানজিদা খানমের পোলিং এজেন্টদের কোনো স্বাক্ষর ছিল না। ভোটের দিন রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে সানজিদা খানম ভোটে এগিয়ে আছেন
এরপর আর কোনো আপডেট ছিল না। কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলও দেওয়া হয়নি। পরে সকালে এই প্রার্থী জানতে পারেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।’এই আইনজীবী বলেন, ‘এর পরপরই ১৮টি কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তা তদন্ত করতে সানজিতা খানম রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছিলেন।
কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে থেকে এ বিষয়ে আশ্বাস না পাওয়ায় এ আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিতের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।’
কী আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট, জানতে চাইলে আইনজীবী সাজু বলেন, ‘১৮টি ভোটকেন্দ্র নিয়ে ওঠা অভিযোগ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এসব কেন্দ্রে কেন পুনর্নির্বাচন দেওয়া হবে না এবং পুনর্নির্বাচন না দেওয়াটা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগ তদন্ত করতে। তদন্ত প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে দিতে বলা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন না দেওয়া পর্যন্ত এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা সানজিদা খানমের আবেদন নিষ্পত্তি না করা পর্যন্ত এ আসনের নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত থাকবে বলে জানান এই আইনজীবী।
সানজিদা খানমসহ ঢাকা-৪ আসনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৯ জন। বিজয়ী ঘোষণা করা আওলাদ হোসেন ছিলেন এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁর প্রতীক ছিল ট্রাক। এ ছাড়া এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ আওলাদ হোসেন বাবলা এবারও জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন।