বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:২২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেফতার ১,৭৫৪ জন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন ইফার গর্ভনরেরা এনসিপির একটা এজেন্ডা বিএনপির নামে বদনাম করা: ইশরাক পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে : প্রধান উপদেষ্টা যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: তারেক রহমানের ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক পদক্ষেপ শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি হবে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শিক্ষার্থীর আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের ফোন নাম্বার উল্লেখের নির্দেশ হাইকোর্টের সচিবালয়ের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত বাবা-মায়ের পাশে শায়িত শিক্ষিকা মাহরিন ‘বিমান বিধ্বস্তের সময় আর্তচিৎকারে পুরো ক্যাম্পাস ভারি হয়ে ওঠে’ প্রয়োজনে আবার ইরানে হামলা করবে যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প বিমান দুর্ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও বার্তা

রাজনৈতিক সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর প্রয়োজন : সেনাপ্রধান

ডেস্ক রিপোর্ট
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, যথাশীঘ্র সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন। সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন মহল থেকে সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে। মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার বর্তমান সরকারের নেই।
বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে দেশ ও জনগণের কোনোরকম ক্ষতি হোক এমন কোনো কাজ সেনাবাহিনী করবে না। কাউকে করতে দেবে না।গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান। বিভিন্ন সূত্রে এসব জানা গেছে।
সূত্র জানান, সেনাপ্রধান তাঁর বক্তব্যের শুরুতে নিরলসভাবে কাজ করে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে অভিবাদন জানান। দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ সব সংস্থা ভেঙে পড়েছে এবং পুনর্গঠিত হতে পারছে না।
শুধু সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত টিকে আছে এবং দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সেনাবাহিনীর অক্লান্ত ও নিঃস্বার্থ ভূমিকা সত্ত্বেও বিভিন্ন মহল থেকে সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে, যা হতাশাজনক। দেশিবিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে যাচ্ছে যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক জুলাই-আগস্ট বিষয়ে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তাতে সেনাবাহিনীর কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানতে পারেন, জাতিসংঘ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও বর্তমান সরকার জাতিসংঘকে সে সুযোগ দেয়নি।
সংস্কারসহ বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বা কীভাবে নিচ্ছে সে বিষয়ে দেশবাসীর পাশাপাশি তিনি এবং সেনাবাহিনী অবগত নন বলে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে তিনি বারবার সরকারকে অনুরোধ করেছেন। তবে সরকার অনুরূপ সংস্কারের বিষয়ে সত্যিকার অর্থে সিরিয়াস নয়। তিনি বলেন, মানবিক করিডরের মতো স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার বর্তমান সরকারের নেই। শুধু একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারই যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক এরূপ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, করিডর বিষয়ে সরকার কী ভাবছে অথবা জাতিকে একটি প্রক্সি ওয়ারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কি না, এ বিষয়ে সরকার স্পষ্টভাবে কিছুই জানাচ্ছে না। করিডর বিষয়ে স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘দেয়ার উইল বি নো করিডর’। একইভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এ সরকারের নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। দেশের অর্থনীতি ও শিল্পকারখানা সম্পর্কে তিনি বলেন, একের পর এক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়েও সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও জনগণের কোনোরকম ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করবে না এবং কাউকেই এমন কোনো কাজ করতে দেবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, নয় মাস ধরে সেনাপ্রধান হিসেবে অভিভাবকহীন হয়ে রয়েছেন। তিনি এক চাতক পাখির মতো একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। একটি নির্বাচিত সরকার সেনাবাহিনীর জন্য অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং যার ফলে সার্বিকভাবে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁর অবস্থান আগের মতোই। দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণের অধিকার একটি নির্বাচিত সরকারেরই রয়েছে। সেনাপ্রধান স্পষ্টভাবে বলেন, যথাশীঘ্র সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে সততার সঙ্গে নিরপেক্ষ থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবার জন্যও তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।তিনি বলেন, এত দীর্ঘ সময় ধরে সেনাসদস্যরা শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন রয়েছেন; যা সার্বিকভাবে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই তিনি একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর যথাশীঘ্র সম্ভব সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেবেন বলে উল্লেখ করেন। এটা না করতে পারলে বিদ্যমান বিশ্ব পরিস্থিতি ও প্রতিবেশী অঞ্চলে উ™ূ¢ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

তিনি সবাইকে অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ কর্তব্যপরায়ণতা ও আনুগত্যের সঙ্গে পালন এবং মজলুমদের অশ্রুজল যাতে না ঝরে এবং তাদের অধিকার রক্ষায় সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ এবং অর্পিত দায়িত্ব ও দেশপ্রেমের আদর্শে উদ্বুদ্ধ থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। নিজ অবস্থান ও আদর্শে অবিচল থাকলে কোনো মহলই সেনাবাহিনী ও দেশের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সূত্র: কালের কণ্ঠ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর