দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ভোটে কারচুপি, ফলাফল বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক রায়হান ।
বুধবার দুপুরে আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পৃথক রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি এদাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী ১ আসনের গোলাম রাব্বানী বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমি ভোটে জয়যুক্ত হয়েছি কিন্তু ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। যার যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত আমার নিকট আছে। ভোটের দিন বাহিরের পরিবেশ শান্তশিষ্ট থাকলেও গোদাগাড়ী তানোরের বিভিন্ন ইউনিয়নে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গণের সহযোগিতায় প্রিজাইডিং অফিসারগণ ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছে। আমি এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাব্বানী বলেন, কৌশলে প্রিজাইডিং অফিসারগণ ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছে,তারা আমার এজেন্টদের নিকট থেকে ফলাফলের পূর্বেই ফলাফল শীটে স্বাক্ষর করে নিয়ে তাদেরকে ভোট গণনার সময় কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। ফলাফল স্থগিত করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর ভোটের দিনই একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
তিনি আরো বলেন, কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকগণ আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর নির্যাতন শুরু করেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে লাঞ্ছিত করছে। মিথ্যা মামলা দিচ্ছে , মুক্তিযোদ্ধা অফিসে নৌকার সমর্থকগণ হামলা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আমার বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আঘাত করেছে এবং ওই অফিসের চেয়ার, টেবিল পুড়িয়ে দিয়েছে। আমি এসব বন্ধের দাবি জানাচ্ছি, পপ্রাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ করছি।
এদিকে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক রায়হান । (বাঘা-চারঘাট) আসনে ভোটে কারচুপি, ফলাফল বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন
বুধবার দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি এদাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রাহেনুল হক রায়হান বলেন, ভোটে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে । আমি সন্তুষ্ট নয়, আমি মনে করি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী কালো টাকা ব্যবহার করেছেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের পরেও আমাদের কর্মীদের একেরপর এক মারধরসহ বাড়িঘর পুড়ানো হচ্ছে, আমার কর্মীরা অনেকে এখন মেডিকেলে ভর্তি আছেন।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রায়হান বলেন, যারা ভোটের কাজে নিয়োজিত ছিলেন পোলিং অফিসার থেকে শুরু করে প্রিজাইডিং অফিসার সবার আচরণ পক্ষপাতিত্ব মূলক ছিলো। আমি যখন বিভিন্ন কেন্দ্রে যায় তখন দেখেছি কক্ষ বন্ধ রেখে তারা কাজ করছিলো। আমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা কোনো সদুত্তর উত্তর দিতে পারেননি।
রাহেনুল হক রায়হান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তবে এখানে মনোনয়ন পান বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন রায়হান। বেসরকারি ফলাফলে ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৯ ভোটে জয়ী হয়েছেন বর্তমান সাংসদ শাহরিয়ার আলম আর কাঁচি প্রতীকের রায়হান পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৭৮ ভোট।