দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ স্মার্ট নৌকার সঙ্গী হতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে পুরান ঢাকার নর্থ সাউথ রোডের সুরিটোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই আলোচনা সভার আয়োজন করেন।
সভায় ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘বাহিরের মানুষ দিয়ে সব হয়না। আমরা ১০ বছর এই আসনে বাহিরের মানুষ দিয়ে দেখেছি। বাহিরের মানুষ তো বাহিরের মানুষ। তিনি এলাকাবাসী ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাউকে মূল্যায়ন করেননি। এবার ঢাকা-৬ আসনের জনগণ স্মার্ট নৌকার সঙ্গী হতে চায়। তাই আমার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-৬ আসনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় জনগণ, দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করি। আগামীতেও তা করবো ইনশাআল্লাহ। আপনারা আমাকে সব সময় আপনাদের সন্তান-ভাই হিসেবে সাথে পাবেন। ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, সব সময় আপনাদের পাশে থাকবো।’
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমার প্রয়াত পিতা মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। তিনি সুখে-দুঃখে সবসময় আপনাদের পাশে ছিলেন। ২০১৫ সালে আমাকেও প্রধানমন্ত্রী ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আপনাদেরকে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। মেয়র হিসেবে দীর্ঘ পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সাধ্যমত কাজ করেছি। চেষ্টার কোনো কমতি ছিলো না, সুখে-দুঃখে আমি আপনাদের পাশে ছিলাম।’
ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, এই এলাকায় আগে রাস্তার লাইট ঠিক মতো জ্বলতো না। আমাদের পুরান ঢাকার ছোট গলিতে লাইট না থাকায় অন্ধকার থাকতো, পথ চলা যেত না। সমস্ত দক্ষিণ ঢাকায় এলইডি বাতি লাগিয়ে আলোকিত করে দিয়েছি আপনাদের জন্য। জলাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই এলাকার অনেক স্থানে পানি জমে যেত। সেই পানি সমস্যা আমি সমাধান করেছিলাম। আবার নতুন করে সেই সমস্যা শুরু হয়েছে।
পুরান ঢাকার অনেক মাঠ ও পার্ক পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো এবং অনেক মাঠ দলখ হয়ে গিয়েছিল জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, আমরা সেই খেলার মাঠ-পার্ক সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩১ টি খেলার মাঠ ও পার্ক নিয়ে আমি জল-সবুজের প্রকল্প করেছিলাম। যার মধ্যে ১৮টি মাঠ এবং পার্ক আমি উদ্বোধন করে দিয়েছি। বাকিগুলো পরে উদ্বোধন হয়েছে, আপনারা ব্যবহার করতে পারছেন। আমরা চেষ্টা করেছি, চেষ্টার কোনো কমতি ছিলো না।
শীতের সময় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে গরীব-দুঃখী মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন জানিয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, প্রতিবছর শীতে আমরা লাখ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছি। আমার নগর ভবনের দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত ছিলো। তিনি বলেন, এই এলাকার হাজারো মানুষকে আমি চাকরি দিয়েছি, যে কোন উপকারের জন্য গিয়ে কেউ খালি হাতে আসেনি। করোনার সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার দেড় লক্ষ পরিবারকে এক মাসের উপরে বিনামূল্যে খাবার বাসায় পৌঁছে দিয়েছি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশাচালক ভাইদের মাঝেও খাবার বিতরণ করেছি। তখন বলেছিলাম, আমার মেয়রের সময় শেষ হয়ে গেলেও আমি আপনাদের পাশে থাকবো। আমার সীমিত সামর্থ্য দিয়ে প্রতি বছর রমজানে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমাদের কর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেয়। আমি আপনাদের সন্তান-আপনাদের হানিফ ভাইয়ের সন্তান, সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তাই আপনাদের কাছে কারো দাবি থাকলে সেটা আমার। আমার উপর আপনাদের যে হক তা আমি পালন করার চেষ্টা করেছি, আপনাদের প্রতিও আমার হক রয়েছে।
এর আগে দুপুরে পুরান ঢাকার নাজিরা বাজার বড় জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষ আগত মুসল্লিদের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের শহীদদের জন্য এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া চান মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।