বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে প্রস্তুতি নিচ্ছি’ স্থবির রেল যোগাযোগ: বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত ছাড়াই বেরিয়ে গেলেন নেতারা ‘তারা আছেন মহাসুখে, খাচ্ছেন, ঘুরছেন, সেলফি তুলছেন’ প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা অবশেষে আলাদা ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ নতুন মামলায় সালমান-আনিসুল-পলকসহ গ্রেফতার ১২ জন সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ২ মার্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনার আবেদন করতে পারবেন আইনজীবীরা ট্রাম্প কেন ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে গাজা খালি করতে চান ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি’, জামিন পেয়ে মন্তব্য পরীমণির সমৃদ্ধ রাজস্ব ভাণ্ডার গঠনে কাস্টমস অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে : প্রধান উপদেষ্টা শান্তি সাম্য ও মানবিকতার দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান সংস্কার না করে নির্বাচন দিতে পারি না : উপদেষ্টা মাহফুজ যান্ত্রিক ত্রুটিতে মেট্রোরেল চলাচল একঘণ্টা বিঘ্নিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রোপাগান্ডা : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

অবশেষে আলাদা ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

প্রায় আট বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনে আর থাকছে না রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের দাবি মেনে নিয়ে এ কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্মানজনকভাবে পৃথক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই ঢাবির অধীনে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হচ্ছে। সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাবি অধিভুক্ত এ সাতটি সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধি, দীর্ঘ সেশনজট ও ভোগান্তি কমাতে কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাবির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর আগে কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত ছিল। একীভূত করার পর থেকেই এ ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে রাজপথে আন্দোলন হয়েছে। অনেকেই নানা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। আবার অনেকেই বলছেন, যে সংকটগুলো নিরসনে কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন হয়নি, পূরণ হয়নি লক্ষ্যও। উল্টো জটিল হয়েছে সংকট।
বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ ও সুফল নিয়ে যেমন ছিল শষ্কা ছিল। বিশেষ করে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সমস্যা বেড়েছে বহুগুণে। তেমনি পরীক্ষা পদ্ধতি সেশনজটসহ নানা সংকটে জর্জরিত ছিল একাডেমিক কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থীদের যেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তেমনি কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর কার্যক্রম চালাতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও। এ ছাড়া নানা সময়ে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ-সংঘাত ও ভাঙচুরসহ নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে মামলার ঘটনাও ঘটেছে।
নানা জটিলতার পর অবশেষে আট বছর পর সেই সম্পর্কের ইতি টানল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সংঘর্ষের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ ঘটল ঢাবি ও সাত কলেজের। তাই ভর্তি প্রক্রিয়াসহ নানা সংকট আরও ঘনীভূত হবে বলে মনে করেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজ, উভয় পক্ষকেই ভুগতে হয়েছে। কারণ অধিভুক্তির পর থেকেই গুণগত মান ও শিক্ষক সংকটসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমস্যাগুলোই পুঞ্জীভূত হয়ে এত বড় সংঘাতের রূপ নিয়েছে। যদি ঠিকমতো সমাধান করা যেত, তা হলে হয়তো এখনকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
তবে পৃথকীকরণের সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তারা বলছেন, বর্তমানে সাত কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাগুলো শেষ করা নিয়ে সমস্যা বাড়তে পারে। পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়েও কিছু সংশয় রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে সমস্যা থেকে উত্তরণে সরকারকে কাজ করার পরামর্শ দেন তারা।
আর ঢাবি শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, সাত কলেজের অধিভুক্তিতে ক্যাম্পাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর ওপর চাপ বেড়েছিল এখন তা কমবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, অধিভুক্তির কারণে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় ভুগতে হয় তাদের। ফলে নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। এ ছাড়াও ভয়াবহ সেশনজট, ফল প্রকাশেও বিলম্ব, কারণে-অকারণে শিক্ষার্থীদের ফেল করানো, ভালোভাবে খাতা মূল্যায়ন না করা, প্রশাসনিক কার্যক্রমে নানা সমস্যা পোহাতে হয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে বাকি পাঁচ দাবি পূরণে আশ্বাস না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। সেসব দাবি পূরণে ২৪ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
একসময় দেশের সব ডিগ্রি কলেজ পরিচালিত হতো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ১৯৯২ সালে সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে তখনকার বিএনপি সরকার। কিন্তু বিপুলসংখ্যক কলেজ সামলাতে গিয়ে হিমশিম দশা হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া বা ফল প্রকাশ করতে না পারায় দেখা দেয় দীর্ঘ সেশনজট। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা। সনদের মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা তখনও রাস্তায় নেমেছিলেন।
২০১৪ সালের শেষদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২৭৯টি সরকারি কলেজকে বিভাগীয় পর্যায়ের পুরোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার নির্দেশ দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরের বছর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আনার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার তাগিদ দেন। এর ধারাবাহিতায় ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজকে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়।
ওই সময়ে তৎকালীন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ অনুযায়ী তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব। এখন থেকে এই অধিভুক্ত কলেজগুলোর ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হবে।
আর অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই উল্টো জটিল হয়েছে সংকট। দূরত্ব বেড়েছে ঢাবি ও সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও। শুধু ‘আর্থিক লাভের আশায়’ ঢাবি প্রশাসন সাত কলেজ ছাড়তে গড়িমসি করে এসেছিল। এ ছাড়াও ক্লাস-পরীক্ষার সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক কাজের বাড়তি চাপ এবং শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া, অধিভুক্তির ফলে বিগত বছরে চাকরির বাজারে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরাও ‘ঢাবির ছাত্র’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিভুক্ত সমস্যায় ফেলছিল বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এসব দাবিতে অনেকবার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন করতে হয়েছে। গত বছর আগস্টে ক্ষমতায় পালাবদলের পর এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। রাজপথের আন্দোলনের সমান্তরালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মও গড়ে তুলেছিলেন তারা।
গত নভেম্বর মাসেও বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানাতে রাজধানীর মহাখালীতে দিনভর সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিতকতায় গত রোববার সংর্ঘষ জড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাতভর এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করতে গেলে রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ সাত কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে অপমান করেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা। এ ঘটনায় তার ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে ওইদিন সন্ধ্যা থেকে সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন। নীলক্ষেত মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে কয়েকশ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে তাদের ধাওয়া দেন। এতে নীলক্ষেত মোড় থেকে কিছুটা সরে যান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা আবার একজোট হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। পাল্টাপাল্টি এ ধাওয়া চলে গভীর রাত পর্যন্ত। দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করতে মাঝে অবস্থান নেয় পুলিশ। এ সময় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে সহায়তা করতে চার প্লাটুন বিজিবিও মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে অবস্থান ছেড়ে নিজেদের ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণে তারা ৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি দেবেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইডেন কলেজের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার।
পরে সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের এক জরুরি বৈঠকে অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে দুপুর পৌনে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, কলেজগুলো ঢাবি থেকে সম্মানজনকভাবে পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই ঢাবির অধীনে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ বিষয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় ইতিমধ্যে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ধৈর্যধারণ, সম্প্রীতি ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তিনি বলেন, ২৭ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করে পাঁচটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সম্মানজনক পৃথকীকরণ; অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এক বছর এগিয়ে এনে এ বছর থেকেই অর্থাৎ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি না নেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়; ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসনসংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে; যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ভর্তির প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।
বাতিলের সিদ্ধান্তকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ : অধিভুক্ত সাত কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় এ প্র্রতিবেদকের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে বাকি পাঁচ দাবি পূরণে আশ্বাস না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
এ ছাড়াও সাত কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র কাঠামো হয়ে গেলে তখন বর্তমান শিক্ষার্থী ঢাবির অধীনে থাকতে চাইবে কি না বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে তখন বর্তমান শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধীনে থাকতে চাইবে কি না তা এখনই বলা জটিল মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাফায়েত হোসেন বলেন, আট মাসে সেশন শেষ করার কথা বললেও এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও শিক্ষাবর্ষ শেষ করে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর ফলাফলে বিলম্ব তো রয়েছেই। এ ছাড়া সক্ষমতা বিবেচনা না করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির কারণে কলেজগুলোতে রয়েছে তীব্র ক্লাসরুম ও শিক্ষক সংকট। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ‘মাত্রাতিরিক্ত ফি’ নেওয়া হয়, এমন অভিযোগ অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের। একই কলেজের শিক্ষার্থী বিপ্লব শেখ অভিযোগ করেন, ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, মানোন্নয়ন, নন-কলেজিয়েটসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু সাত কলেজের উন্নয়নে সেসব ব্যয় করা হয় না। মানুষের কষ্টার্জিত এত টাকা কে বা কারা ‘লোপাট’ করছে তার কোনো জবাবদিহি নেই।
‘ঠিকমতো ক্লাস পরীক্ষা হয় না। ঢাবি এ বিষয়ে তদারকি করে না কিন্তু তাদের তদারকির দায়িত্ব রয়েছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফলোন্নয়ন ফি নেওয়া হয় ৫০০ টাকা সেখানে আমাদের ফি দিতেই হয় ২ হাজার ৪০০ টাকা করে। এভাবে বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক “গায়েবি ফি” রয়েছে’, বলেন তিনি।
অধিভুক্ত ইডেন মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার শ্রাবণী বলেন, কোনো কোনো বিভাগে বারোশ-তেরোশ শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র আট থেকে ৯ জন শিক্ষক। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ তো দূরে থাক, একাডেমিক পড়াশোনারই পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হলেও সাত কলেজের সুনির্দিষ্ট কোনো একাডেমিক ক্যালেন্ডার নেই। বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোতে প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই। ভর্তি কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতার ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি ও মানসিক যন্ত্রণায় ফেলে।
এ ছাড়া সাত কলেজের সার্টিফিকেটে ‘এফিলিয়েটেড’ শব্দটি থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বলেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, এ শব্দের কারণে বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হয় তাদের। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই ‘বিব্রত’ হতে হয়।
ইডেন মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসফিয়া বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা কিন্তু প্রশ্ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, খাতাও দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ফলে এমনও দেখা যায়, আমাদের সিলেবাসের বাইরে থেকেই প্রশ্ন আসছে।
নামমাত্র সমাবর্তন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির ফলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কী সুবিধা পেয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ হাসান অনেকটা উপহাসের সুরে বলেন, সুবিধা বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সার্টিফিকেট আর স্নাতক শেষে একটা ‘নামমাত্র’ সমাবর্তন।
তবে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকাকালে যে বিস্তর সেশনজট ছিল সেটি কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া স্নাতক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট পায় শিক্ষার্থীরা, এটিকেও অনেকে ভালো বলছেন। তার মধ্যেই হঠাৎ অধিভুক্তি বাতিল করায় বর্তমানে অধ্যয়নরত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়েও অনেকে উদ্বিগ্ন।
এদিকে দাবি পূরণে ২৪ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ কোনো গাড়ি সাত কলেজের সামনে দিয়ে চলতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা কলেজের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে তারা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুর ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। আমাদের কোনো শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ পার করেনি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমরা এই সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। বিষয়টি সমাধানের জন্য সকালে আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। সেখানে আমরা ৬ দফা উত্থাপন করেছিলাম। সেখানে একটি দাবি ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্ত বাতিল করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আমলে নেওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়েছে। এর জন্য তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই।
মঈনুর ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানে নিয়ে আসার দায় প্রো-ভিসির। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই প্রো-ভিসিকে পদত্যাগ করতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা নিউমার্কেট থানা ঘেরাও করব। পাশাপাশি ঢাকা কলেজসহ ৭ কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাস যেতে দেব না।
অধিভুক্ত বাতিলে খুশি ঢাবি শিক্ষার্থীরা : অধিভুক্ত বাতিলকে ‘সমস্যা থেকে পরিত্রাণ’ বলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব, আবাসন সংকট ও শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক না থাকাসহ নানা সংকটে যখন বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেই ভুগছে তখন নতুন করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভার বহন করতে পারছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইরাজ নূর চৌধুরী বলেন, সাত কলেজ ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ার ফলে আমাদের বিগত বছরগুলোতে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হতো। এ ছাড়াও অধিভুক্তির ফলে বিগত বছরে চাকরির বাজারে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের ঢাবির ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিত ফলে যা ছিল এক ধরনের প্রতারণা। এ ছাড়াও ঢাবি আবাসন, লাইব্রেরি ও গণপরিবহন ব্যবহার করার দাবি জানিয়ে আসছিল এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা, যেখানে এ সুবিধাগুলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই পর্যাপ্ত ছিল না। এই অধিভুক্ত বাতিলের মাধ্যমে সেই সমস্যাগুলো থেকে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের আরেক শিক্ষার্থী তাশাহুদ আহমেদ রাফিম বলেন, সাত কলেজ অধিভুক্ত হওয়ার ফলে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। ক্লাস-পরীক্ষার সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক কাজের বাড়তি চাপ এবং শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া যেন ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশকে এলোমেলো করে দিয়েছিল। অরাজক পরিস্থিতির পর হলেও অবশেষে আমাদের যে বেরিয়ে আসার সুযোগ হয়েছে, এতেই ভালো লাগছে। তবে অধিভুক্তি বাতিলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা খুশি হলেও ধোঁয়াশায় রয়েছেন শিক্ষকরা।
সিদ্ধান্ত ‘বুমেরাং’ হয়েছে, বলছেন বিশ্লেষকরা : সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ’। প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার সদস্য, এখানে ৮০টির বেশি বিভাগ, ১৫টির মতো ইনস্টিটিউট, এগুলো মিলিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব মানসম্মত শিক্ষাই নিশ্চিত করতে পারিনি। উল্টো সাত কলেজের এক লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর চাপ, সবকিছু মিলিয়ে ভালো উদ্দেশ্যে যদি অধিভুক্ত করেও থাকে শেষ পর্যন্ত তা বুমেরাং হয়েছে, গত আট বছর ধরে তা দেখা যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্ত কলেজগুলো যে সেবা পাওয়ার কথা আমরা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। অধিকন্তু অধিভুক্তির ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে একটা অতিরিক্ত ‘বোঝা’ বহন করতে হয়েছে। ফলে যে উদ্দেশ্যেই অধিভুক্ত করা হোক না কেন আমার বিবেচনায় তা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। বরং আরও পর্যালোচনা করে এর ভালো সমাধান বের করার প্রয়োজন ছিল।
অধিভুক্তি বাতিলে নতুন করে সংকট তৈরি হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএম ফায়েজ বলেন, হঠাৎ এ সিদ্ধান্তের কারণে সংকট কিছুটা তৈরি হতে পারে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সমাধানেরও পথ রয়েছে। বিশেষ করে ভর্তিসহ নানা ধরনের প্রক্রিয়া রয়েছে। আমি আশা করছি, সরকার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবে। শিক্ষার্থীরা কী চায়, তাদের আক্সক্ষাক্ষা কী, তাদের আগ্রহটা কোথায়, সেটি বুঝে যৌক্তিক সমাধানের পথে হাঁটতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইউজিসি সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর