বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি করা হয়েছে-এমন মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, নিশ্চিত হয়েছি যে, যারা এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বা নিয়েছে তারা সবাই গানশটে আহত।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ছাত্র আন্দোলনে আহতদের অবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, নিশ্চিত হয়েছি যে, যারা এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বা নিয়েছে সবাই গানশটে আহত। কারণ গণহত্যায় অধিকাংশদের গুলি বুক থেকে ওপরের দিকে লেগেছে।
আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি করা হয়েছে এ কথা জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, প্রমাণ মিলেছে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ৯২০ জনের অধিকাংশরই, যাদের গুলি বুক থেকে ওপরের অংশে লেগেছে।
হাসপাতালটির পরিসংখ্যান তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, নয়শো জনেরও বেশি চিকিৎসা নিয়েছে এখানে। বর্তমানে ৪৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন, যাদের পুনর্বাসন প্রয়োজন। ২৮ জন রোগীর চোখ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। যাদের অপারেশন প্রয়োজন, তাদের কয়েক ধাপে অপারেশনসহ সব ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, তদন্ত করে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে, দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল পুনগঠনে তদন্তের কোনো সম্পর্ক নেই। তদন্ত তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় চলবে এবং এটা অব্যাহত থাকবে। তবে চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনেরও আহ্বান জানান।
প্রথম দিকে যারা চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখানে এসেছেন, তারা পুলিশের ভয়ে তাদের নাম ঠিকানা বলতে চায়নি। দ্রুত সময়ে চিকিৎসা নিয়ে এখান থেকে চলে যেতে চেয়েছেন তারা। যাদের ভর্তি থাকতে বলা হয়েছে, তারা থাকতে চাননি কারণ তারা আশঙ্কা করেছেন পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে ৪৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন এ তথ্য জানিয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. খাইর আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ১৫ দিনে ১৬০ জনের অপারেশন করা হয়েছে। আর ২৮জন রোগীর চোখ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে চোখ ক্ষতিগ্রস্তরা দৃষ্টি আর ফিরে পাবেন কি না সেই শঙ্কায় কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত তাদের।