জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব’ এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করে দারুন আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আরেফিন শুভ। এবার তাকে নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন কিছু নেটিজেন।
সম্প্রতি শুভ রাজধানীর পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন। সরকারি নিয়ম-নীতি এবং নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে শুভ এই প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন। সরকারি আবাসিক প্লট পাওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অনেক নেটিজেন বোঝাতে চাইছেন যে, মুজিব বায়োপিকে অভিনয়ের কারণে তিনি প্লটটি বিনামূল্যে পেয়েছেন। বিষয়টি আসলে সেই রকম নয়। তিনি সেলিব্রেটি কোটায় প্রচলিত বাজার মূল্যে ওই প্লটটি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরেফিন শুভকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল হওয়ার পর সোশ্যাল হ্যান্ডেলে শিল্পীদের নিয়ে সময়োপযোগী একটি পোস্ট করেছেন মুজিব বায়োপিকে শু’ভর সহশিল্পী জনপ্রিয় অভিনেত্রী – উপস্থাপক ও নাট্যকার এলিনা শাম্মী। তার সেই পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
শিল্পীরা স্রোতের বিপরীতে থাকা একদল মানুষ, যারা অনেক ভালো কাজের সুযোগ এবং বিত্ত বৈভবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিল্প – সংস্কৃতিকে ভালোবেসে জীবন অতিবাহিত করে। তাদেরও সমাজের আর দশজনের মত পেটের দায় মিটিয়ে সংসার চালাতে হয়, সন্তান মানুষ করতে হয়। এতসব করার পর সেই স্বল্প আয়ের একজন শিল্পীর নিদেনপক্ষে সঞ্চয় বলে কিছুই থাকে না। তাই শেষ জীবনে অনেক শিল্পীকে অন্যের অনুগ্রহ নিতে হয়। আবার কারও কারও আত্মমর্যাদার কথা ভেবে রোগে ভুগেই জীবনাবসান ঘটে।
শিল্পীরাও মানুষ, তাদেরও এক বা একাধিক জীবনের ভার বহন করতে হয় – এটা সাধারণ মানুষ বোঝেই না। পর্দায় ঝলমলে উপস্থিতি দেখে সবাই ভাবেন – শিল্পীরা বুঝি বাস্তব জীবনেও এমন চকচকে। এমনই প্রেমময় ও বিত্ত বৈভবে ভরা জীবন তাদের। এরা টাকার মোড়কে ঢেকে রাখেন নিজেকে। সাধারণ মানুষের এমন সব ভুল ভাবনার যাতাকলে পড়ে জীবনে নাভিশ্বাস উঠে যায় শিল্পীদের। তারা নিজ যোগ্যতায় কিছু অর্জন করলেও সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করে সকলে মিলে তাদের জনসমক্ষে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। অথচ খেয়াল করে দেখবেন শিল্পীরা খুনি না, ঘুষখোর না, ঋণখেলাপি না। তারা কোমল মনের আবেগী এক হতভাগা জনগোষ্ঠী, যাদের কোন দোষ না থাকলেও অহেতুক নানান দোষের বোঝা চাপানো হয় তাদের ঘাড়ে।
শিল্পীরা সকলের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে, দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে তাদের সবার আগে দেখি আমরা। কিন্ত পান থেকে চুন খসলেই তাদের দিকেই তর্জনি ওঠে সবার। আজ অবধি এর কারণ বুঝতে পারলাম না যে, কেনো এই নিরীহ মানুষগুলোর ওপর এত আক্রোশ সবার।