আন্তঃজেলা বাসগুলো কাঁচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালসহ ঢাকার অদূরে নির্মাণ হতে যাওয়া টার্মিনালগুলো এবং ঢাকার অভ্যন্তরে পরিচালিত নগর পরিবহনগুলো সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার কাঁচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমাদের যে বাস টার্মিনালগুলো আছে সেগুলো আশির দশকে করা হয়েছে। তখন শুধুমাত্র টার্মিনাল হিসেবে করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত ওই টার্মিনালগুলোকে ঘিরেই আন্তঃজেলা এবং সিটি বাস সব এক জায়গায় রাখা হতো। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা সে প্রেক্ষাপটে এখন তা আর কার্যকর নয়। তাই বাস রুট রেশনালইজেশন কমিটির মাধ্যমে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি, আন্তঃজেলা বাসগুলোকে ঢাকার বাইরে রাখতে হবে। আর ঢাকার মধ্যে যে টার্মিনালগুলো রয়েছে সেখানে শুধুমাত্র নগর বাসগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
প্রাথমিকভাবে কাঁচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল চালুর এসব কার্যক্রম নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ তিনি বলেন, ‘ভূমি উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা এখানে আরো কিছু কাজ শুরু করব। এখানে সীমানা প্রাচীর দিতে হবে, কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। আমরা পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসব। কি ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করলে তারা সুষ্ঠুভাবে এখানে তাদের কার্যক্রমগুলো শুরু করতে পারবে, সে বিষয় নিয়ে আলাপ করে আমরা অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করব। এই পুরো কাজ আমাদের নিজস্ব অর্থায়নেই এখন পর্যন্ত আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদে যাতে করে আমরা একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে পারি, সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমরা পরিকল্পনা শুরু করেছি। আমাদের দুটো টার্মিনাল -একটি বাঘাইড়ে আরেকটি এই কাঁচপুর বাস টার্মিনাল। এই দুটো বাস টার্মিনালের জন্য আমরা পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। পরামর্শকের মাধ্যমে আমরা পূর্ণভাবে এই টার্মিনালগুলোর নকশা প্রণয়ন করব। পরবর্তীতে পূর্ণভাবে আমরা সেটা নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করব।’
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, ‘শুধু কাঁচপুরে বাস টার্মিনালই নয়, সমন্বিত অনেক কার্যক্রম এক সাথে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা যেমন বাস রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রমের আওতায় যাত্রাপথগুলোকে নির্ধারণ করছি তেমনি সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকে আরো আধুনিক করছি এবং সেটার পরিসর বৃদ্ধি করেছি। সেখানে আলাদা ডিপোর ব্যবস্থা করেছি। সব মিলিয়েই আমাদের কার্যক্রম চলমান এবং সমন্বিত সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পরই আমরা পূর্ণ সুফল পাবো। আগামী বছর এটা চালু হয়ে গেলে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার বাসগুলো আর সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী টার্মিনালগুলো ব্যবহার করতে পারবে না। সেগুলো কাঁচপুরে চলে আসবে এবং তারা ঢাকা শহরের ভেতরে আর প্রবেশ করবে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার যানজট একটা সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে। সুশৃঙ্খল যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ঢাকা নগর পরিবহন চালু করেছি, সেসব বাস এই কাঁচপুর হতে ঢাকাগামী যাত্রীদের পরিবহন করবে। ফলে গণপরিবহন পূর্ণ রূপে শৃঙ্খলায় চলে আসবে।’
তিনি বলেন, চলমান ভূমি উন্নয়ন কাজ প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং বাকী কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ হবে। সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ কাজ আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দার আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো বোরহান উদ্দিন, সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান ও নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব খাদেম উপস্থিত ছিলেন।