স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, উন্নত বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, একটি জাতির ভবিষ্যৎ সে দেশের শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবার মানদন্ড সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সামাজিক নানারকম সংকোচ এবং দ্বিধার কারণে বিষয়গুলো সেভাবে আলোচিত হয় না।
মন্ত্রী আরো বলেন, এতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হতে হয় কিশোরীদের, যারা আমাদের মেয়ে ও ভবিষ্যতের গর্ভধারিনী মা এবং পরিবারের মূল চালিকাশক্তি।
সোমবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ আয়োজিত “নগরীর কিশোর-কিশোরী ও মায়েদের প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক পলিসি কনফারেন্স” এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য ড. আব্দুল আজিজ এমপি, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ডক্টর সাদেকা হালিম এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ পরিচালক চন্দন জেড গোমেজ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসার পর মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে বিগত ১৫ বছরে ২ হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীত করেছে। ফলে স্বাস্থ্যখাতের যে মানদন্ডগুলো আগে অবহেলিত ছিল তা এখন আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে পারছি।
তিনি বলেন, তারপরও আমাদের সমাজে কিশোরী, অবিবাহিত মেয়ে ও নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি এখনো কিছুটা উপেক্ষিত। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কারিকুলামে বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করতে হবে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, পাবলিক টয়লেটের কথা না হয় বাদই দিলাম, কিন্তু এখনও বিভিন্ন ভালো ভালো দপ্তরের বাথরুমও নারীদের ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠেনি। তাছাড়া অনেক জায়গায় টয়লেট থেকেও এডিস মশার কামড়ে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে অবস্থানে নিয়ে যেতে চান সেখানে আমাদের শিশু, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই।
এই নীতি সংলাপের মাধ্যমে নগরীর কিশোর-কিশোরী ও মায়েদের প্রজননের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।