রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
সরকারের ক্ষমতাকাল বিষয়ে আমি কিছু বলিনি, জনগণ বলেছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিমান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বও পেলেন শেখ বশিরউদ্দীন সংসদে আইন করে ইসরাইলিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করল মালদ্বীপ ‘সয়াবিন তেল ও শিল্প গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সরকারের অপরিণামদর্শিতা’ সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ২১ মে ভারত থেকে এলো আরও ১০ হাজার টন চাল ডিবিপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর সাক্ষাৎ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কায়রোতে আলোচনায় বসছে হামাসের প্রতিনিধি দল মহাকাশ প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বাংলাদেশ ও তুরস্কের জন্য লাভজনক হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও শ্রম আইন সংশোধনের দাবি আইবিসির যৌতুক বন্ধে ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

নোরার লেখাপড়া

দীপক বড়ুয়া
আপডেট : শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৪:০১ পূর্বাহ্ন

নোরা সবে সাড়ে তিন বছরে পা রাখল। নারিতা নোরার দিদিভাই। নারিতা উইলিয়াম কেরী একাডেমিতে পড়ে, গ্রেড ওয়ানে। ওদের মা, আমার বউমা ফ্রোবেল প্লে ইশকুলের টিচার। সকাল ৮টা ত্রিশে বেরোয়। তার আগে বউমা নোরাকে আমাদের বিছানায় শুইয়ে দেয়।
আমি ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন নোরার বিছানা সাজিয়ে রাখি। মাথার  বালিশ, পাশ বালিশ। পাশ বালিশ ছাড়া নোরা ঘুমাতে পারে না। রাতে নারিতার পড়া, খাওয়া, রান্নাঘরের কাজ শেষ হতে রাত সাড়ে ১১টা বাজে। ততক্ষণ  নারিতা, নোরা ঘুম বিছানায় যাবে না। আমাদের বিছানায় টিভিতে কার্টুন দেখে। আমার ছেলে প্রিতম নোরাকে এই বছরে  ইশকুলে দেবে। উইলিয়াম কেরী একাডেমিতে ভর্তি পরীক্ষা দেয় নোরা। পাস করেছে।
নোরা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ১১টায়। আমার ছেলে বলে, বাবা, ইশকুলে যেতে পারবে তো নোরা।
আমি বললাম, পারবে। তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
নোরা ছোট হলে কী? কাজে, কথায় পাকা। সে যখন সকালে ঘুমায়, পাশে আমি শুই। আমার শোবার শব্দে পাশ ফিরে শুয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে। নড়াচড়া চলবে না আমার। একটু নড়লেই নোরা বলে, দাদু, আমি ঘুমুচ্ছি, এত নড়ো কেন?
নোরা এ বি সি ডি, অ আ, এক দুই, ওয়ান টু অনেকটা দেখে দেখে লিখতে পারে। ওর জন্য আমিও শুয়ে থাকি। নোরার ঘুম ভাঙে বেলা ১১টায়, কোনোদিন ১০টায়। ঘুম ভাঙতেই বলে, দাদু আমার খিদে পেয়েছে। খাবো। সকালে ঠাম্মি নোরার সুজি তৈরি রাখে। ঘুম থেকে উঠলে ডিম পোচ। আমি টিভি অন করে কার্টুন চ্যানেল দিই। নোরা শুয়ে, বসে কার্টুন দেখে। আমি প্রথমে সুজি, পরে ডিম পোচ চামচ দিয়ে খাওয়াই। খাওয়া শেষ। নোরা বলে, দাদু আমি লেখাপড়া করব। আমি অবাক। এত ছোট মেয়ে, পড়তে বলে! নোরার পড়ার আগ্রহ দেখে অবাক। ও আরও বলে, মা পড়তে বলেছে।
ছোট বয়সে এতটা ইচ্ছে, কোনো শিশুর থাকে! নোরার আছে। আমি বলি, খাতা, পেনসিল কই? নিয়ে এসো।
নোরা দৌড়ে মায়ের ঘর থেকে খাতা, পেনসিল আনে।
আমি এ বি, অ আ, এক দুই, ওয়ান টুর ঘর আঁকি।
নোরা বলে, মা আমাকে বারবার লেখাপড়া করতে বলেছে দাদু। ইশকুল থেকে ফেরার পথে মা আমার জন্য আইসক্রিম আনবে।
ওমা তাই, তুমি বড়ো হচ্ছো, ইশকুলে যাবে, পড়ালেখা করতে হবে। আইসক্রিম খাবে। কী মজা!
তাই তো পড়ালেখা করছি।
আমি প্রথম লাইনে লিখি, পরের লাইনে নোরা। লেখার সময় আমি বলি, বড়ো করে বলতে হবে লেখার সময়। তা হলে মনে থাকবে, ভুলে যাবে না দাদু।
-দাদু মন কী? লিখে লিখে নোরা বলে।
বড়ো বিপদ। মন কী? কীভাবে বোঝাই। এটা একটি দারুণ সমস্যা। শিশুদের পড়াতে নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। দেরিতে আবারও নোরার প্রশ্ন, দাদু মন কী, বলো না!
মন হলো, মনে রাখার যন্ত্র। পড়লে, লিখলে মনে থাকে। ভুলবে না আর।
বেশ, দাদু যন্ত্রটা কী?
মহা মুশকিল তো! প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন। এবার যন্ত্রের কী উত্তর দিই? যন্ত্র হলো মেশিন। আবার প্রশ্ন করার ভয়ে বলি, দাদু এ বি শেষ? এবার ওয়ান টু লিখো।
লিখছি।
লিখা শেষ। নোরা বলে, দাদু কার্টুন দেখি।
শ্বাস ফেলি দ্রুত। বাঁচলাম এই যাত্রায়।
বউমা ইশকুল থেকে ফেরার সময় নারিতাকে ইশকুল থেকে নিয়ে আসে।
এবার আমার ছুটি। নারিতা, নোরা মায়ের সঙ্গে খাবে, ঘুমাবে।
রাতে পড়া শেষে আবারও নোরা আমার সাথি। খাওয়ার পরে রাতের বিদায় মুহূর্ত। নারিতা ঠাম্মিকে জড়িয়ে, আদর করে যাবে। নোরা আমার দুই গালে আদর দেবে, জড়িয়ে ধরে বলবে, গুড নাইট দাদু।
আমি অস্পষ্ট গলায় বলি, গুড নাইট দাদু।
দুজনের আদর-ভালেবাসায় কত মায়া। ওদের  রুমে চলে যাবার পরে বুঝি, কী মিষ্টি, আদুরে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর