বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনসেবা করা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য ছিল না, তার উদ্দেশ্যই ছিল জনগণের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করা।
তিনি বলেন,‘আওয়ামী সিন্ডিকেট দেশের নিরীহ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। শেখ হাসিনা কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের কারাগারে পাঠানো হতো।’
আজ শনিবার রাজধানীর জুরাইনে বিক্রমপুর প্লাজার সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ,বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা.পারভেজ রেজা কাকন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র নেতা তানভীর আহমেদ রবিন, মেহেবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন,‘প্রতি রাতে কারওয়ান বাজারে ৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়,তাহলে তো নিত্যপণ্যের দাম বাড়বেই। আপনারা কী করেন? এতোদিনেও সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। জনগণতো বলবেই,শেখ হাসিনার সময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়তো এখনও বাড়ছে। তাহলে তফাৎটা কী?
ঢাকা শহরের মধ্যে যাত্রাবাড়ী জুরাইন এলাকায় সবচাইতে বেশি ডেঙ্গু।’ তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে সচেতন থাকার আহবান জানান।
রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি কারাগার ছিল শেখ হাসিনার আয়নাঘর। তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলেছে তাদেরকে সেই ঘরে বন্দী করে রাখা হতো। শুধু বিএনপি নেতা-কর্মী নয়। এদেশের জনগণ যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছে তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চলেছে।’
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন,‘জনগণ আওয়ামী লীগকে বিদায় করে দেশকে মুক্ত করেছে। জনগণ মুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের কালো টাকা এখনো রয়ে গেছে, তারা নাশকতা করে যাচ্ছে, করবে। আমরা আগেই বলেছিলাম তারা নাশকতা করবে। কারণ সরকারি সংস্থায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের লোক রয়েছে তারা এসব করবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড গঠন করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তাই আওয়ামী লীগ এটাকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে। তারা ৫০টি পল্লী বিদ্যুৎকেন্দ্র শাটডাউন করলেন তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে। তাহলে হাসিনার আমলে তা কেন করলেন না? সে সময় দাবি করলেন না কেন? আপনাদের ন্যায্য দাবি থাকতে পারে কিন্তু শাটডাউন করলেন কেন? কার স্বার্থে করলেন? হাসিনাকে প্রত্যাবর্তন করাতে চান? আবার বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক লুট করার ব্যবস্থা করতে চান?
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী আরও বলেন, ‘গড়িমসি না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্বাচন হলে নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। একজন এমপিকে কিছু না কিছু ভাল কাজ করতে হয়। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে পছন্দ করে নির্বাচিত করবে তিনিই এমপি হবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা ১৬ বছর যুদ্ধ করেছি। আমাদের কথা হল যেই ক্ষমতা আসুক জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’