শিল্প-সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধি। ইতিহাস সমৃদ্ধ হলেও এর কদর খুব একটা নেই। বিশেষ করে লোকসংগীত শিল্পীরা অনেক সময়ই প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হন। এরপরও অনেকে দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে ভালোবেসে লোকসংগীতের জন্য লড়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অন্যতম অণিমা মুক্তি গোমেজ।
লোকসংগীতে তার দীর্ঘ লড়াইয়ের স্বীকৃতি পেয়েছেন মঙ্গলবার (৮ আগস্ট)। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদকে শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে সম্মাননা পেয়েছেন এই লোক শিল্পী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক পেয়ে নিজের কাজের প্রতি আরও বেশি দায়িত্ববান হতে চান অণিমা।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো স্বীকৃতি আনন্দের এবং প্রাপ্তির পাশাপাশি দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। আজ থেকে আমার দেশের প্রতি আরও বেশি নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে।’
আব্বাস উদ্দিন, ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর সান্নিধ্য পেয়েছেন অণিমা। লোকসংগীতকে বিকশিত করতে বাকি জীবন কাটাতে চান। তার কথায়, ‘আমার শুরুটা রবীন্দ্র সঙ্গীত দিয়ে হলেও পরবর্তীতে লোকসংগীতে থিতু হই। গত তিন দশকের বেশি সময় লোকসংগীত গেয়ে যাচ্ছি এবং লোক শিল্পী তৈরির চেষ্টা করছি। বাকি জীবন লোকসংগীতের সঙ্গেই কাটাতে চাই।’
সঙ্গীত একটি সাধনার বিষয়। অণিমার স্বামী রঞ্জিত কুমার দাস স্ত্রীর সাধনা খুব কাছ থেকে দেখছেন।
স্ত্রীর সাধনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘খেলার মতো গানও অনুশীলনের বিষয়। সে এখন অনেক সিনিয়র শিল্পী। কিন্তু এখনো প্রতিনিয়ত নিয়ম করে রেওয়াজ করে নতুন শিল্পীদের মতোই। তার এই নিবেদনের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা পুরো পরিবার গর্বিত।’
লোকসংগীতের অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। কিন্তু অণিমার জনপ্রিয়তা মূলত ভাওয়াতেই। ঢাকায় বেড়ে ওঠা অণিমার কণ্ঠে উত্তরাঞ্চলের ভাওয়াই রপ্ত করাটা একটু চ্যালেঞ্জই ছিল। তার কথায়, ‘আমি ঢাকার মেয়ে হয়ে উত্তরাঞ্চলের ভাষার গান শুরু করা একটু চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেক সাধনার মাধ্যমে করেছি।’
বেগম মুজিব পদকের আগে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক পুরস্কারই পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনন্যা অ্যাওয়ার্ড, মিউজিক্যাল অ্যাওয়ার্ড অফ কালচারাল রিপোর্টার ইউনিটি, ত্রিপুরা লোকসংগীত পুরস্কার।